বিশ্ব সংসারের তাবৎ সৃষ্টিই আমাকে অবাক করে…

By Obak Amir

তোমার বুকের ভেতর হাজার তারার বাস
ইচ্ছে হয় সেখানে ধ্রুবতারা হয়ে থাকি ।
সমুদ্রে বেড়াতে গিয়ে যদি পথ ভুলে যাও !
আমি দিক বলে দিবো, ফিরে এসো ।

রোজ পূর্ণিমা রাতে চাঁদ দেখে দেখে
যদি হাঁফ ধরে যায় !
দৃষ্টি বদল করে একবার চেয়ে দেখো বুকের পরে,
আমি মিট-মিট করে জ্বলে উঠবো
তোমার ভালো লাগবে, দেখো !

মন খারাপের রাতে যদি বুকে বালিশ চাপা দাও,
আমারও যে দম বন্ধ লাগবে ।
আপন ঐশ্বর্য জলাঞ্জলি দিবো সে রাতে,
কুহেলিকার কাছে আমি আত্মসমর্পণ করবো,
বিশ্বাস করো, আমি তোমার মন ভালো করে দিবো ।

এভাবে আমার দীর্ঘ প্রবাস জীবনে
তোমার মনের সাথে সন্ধি হবে ।
একদিন টের পাবে তুমি আমি আর আলাদা কেও নই
সেই দিন হাজার তারার আচ্ছাদনে আমরা
মরোদ্যান হবো ।
যুগল আহ্লাদে কাটিয়ে দিবো মুহুর্মুহু কিছু বসন্ত ।

১৭.১০.২০১৩
সন্ধ্যা

By Obak Amir

কচু পাতায় বৃষ্টির ফোটা

টুপ করে ঝরে পড়ে,

কি ভেবে জল’টুকু উগরে ফেলে

পাতা দুটো দু’পাশে নড়ে ।

জিজ্ঞেস করলাম-

কেন গো ধরে রাখলে না !

জল তো বেশ !

 

কচু পাতা লজ্জায় কাচু-মাচু,

“ভিজে গেলে বুঝি অপবাদ হবে না !

বৃষ্টি বড় পাজি, আমি ওকে হাড়ে হাড়ে চিনি,

যতক্ষণ বর্তমান, ততক্ষণ তার ভাব ।

যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ ভিজায় অঝোরে ।

তারপর আর দেখা পাই না কোন খানে ।”

 

আমি বুঝলাম-

বৃষ্টির প্রতি তোমার বড্ড অভিমান ।

তুমি পড়েছো বৃষ্টির প্রেমে,

তাই তো চোখ’দুটো সদা এত টলমলে ।

বৃষ্টিকে আমি যতটা অবোধ ভেবে ছিলাম,

ততটা সে মোটেই নয় ।

বৃষ্টি যৌবনা এবং চৌকশ ।

 

তোমার কচু পাতা রঙের সিল্কের শাড়িটা

ধীরে ধীরে পরাজিত হচ্ছে

যৌবনা বৃষ্টির চৌকশতার কাছে ।

আর আমার চোখ দুটো হচ্ছে লাল ।

০৬-০৬-১৩

সকাল

By Obak Amir

তোমায় নিয়ে নেত্র পাতায় আঁকা ছবি,

নিশীথে মেতে উঠা ক্যানভাস আর রং-তুলি ।

অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি আমি

আমার চোখের পরে,

দেখি, কেমন করে রং লাগে ঐ চোখের জলে ।

এক ফোটা রং মিশে এক ফোটা জলে,

ক্যানভাসে ছিটকে পড়ে দুই ফোটা রং

কই ! জল নেই তো !

দিবা আলোয় চমক ভাঙ্গে

আবার লাগে চমক,

কিসের ঘোরে বিভোর হয়ে

জিয়ন করি রূপক ।

সর্বস্ব লয়ে হাজির হই তোমার উঠানে

বৃত্তান্ত সব একে একে

প্রকাশ করি লীন হয়ে ।

এই টুকু চোখের পাতায় ফুটে কি তোমার ছবি

তোমায় দেখি আর ভাবী

এখনও যে ঢের রয়েছে বাকী,

আমায় এক টুকরো ক্যানভাস দিবে !

তোমায় আঁকি !

মধ্যরাত

০২/০৩/১২

By Obak Amir

যখন তুমি কড়ানাড়ো আমার দরজায়

আমি ভুলে যাই সব অতীত, ভবিষ্যৎ

শুধু সাদৃশ্য হয়ে উঠে বর্তমান ।

মন বলে আর কি চাই !

তুমি আছো ! তুমি আছো !

এর চেয়ে বড় কোন সত্য নাই ।

 

তোমার প্রতিটা উষ্ণ আদর

শিহরিত হরে তোলে আমার সর্বাঙ্গ,

আমার শিরা থেকে ধমনীতে

ক্রমশ প্রবাহিত হতে থাকে সেই শিহরণ ।

এ যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত আবেশিত করে রাখে

আমার দশ দিগন্ত ।

 

তোমার আগমনকামী এই মন

একটু অনিয়ম সহ্য করতে পারে না,

যেন তুমি আমার জন্য !

যেন তোমার আর কোন জগৎ নেই !

যেন আমি ব্যতীত তোমার আর কোন উপাসনা নেই !

এ যেন তোমার রাজ্যে

আমার এক নায়কতন্ত্র ।

 

যখন তুমি আদর করে কাছে টেনে লও

চুমু রেখা এঁকে দাও কপোলে,

মন বলে আর কি চাই !

তুমি আছ ! তুমি আছ !

এর চেয়ে বড় কোন সত্য নাই ।।

২৮-০৭-১২

সন্ধ্যা- ৫:৩০

 

By Obak Amir

আমাজনের গভীর জঙ্গলে

যখন আমি পথভ্রান্ত দিশেহারা পথিক,

তুমি মুষ্টিবদ্ধ করে নিয়ে এলে বেঁচে থাকার মানচিত্র ।।

আমায় শিখালে;

কেমন করে পড়ি দিতে হয় অজানা পথ,

আমায় অবাক করে দিয়ে;

টাইগ্রিস পাড়ি দেওয়ার তরি বানিয়ে নিলে

আমায় করলে তোমার সঙ্গী ।

পাষাণের হৃদয়ে ঠুক ঠুক করে

সুনিপুণ হস্তে খোদায় করে নিলে নিজের নাম ।

আমি গভীর যত্নে আগলে রেখেছি

সেই প্রস্তর খণ্ড ।

তোমার বিনিদ্র রজনী,

আকুল চোখে চেয়ে থাকা দেখে-

একএক করে গলে যেতে লাগলো

হৃদয়ের জমাট কঠিন শুভ্র ।

সেই ছন্নছাড়া খামখেয়ালি আমি

মননিবেশ করতে লাগলাম,

তোমার স্বরলিপির প্রতিটি অক্ষর

অধ্যয়ন করলাম দিনের পর দিন ।

তোমার সুরের রেওয়াজ করলাম সকাল-সন্ধ্যা ।

কিন্তু আশাতীত গাইতে পারলাম না

আমার অদৃষ্টির বাম নীতি

আজও কটিয়ে উঠতে পারিনি ।

বিশ্বাস কর !

আমি চেষ্টা ত্রুটি করছি না,

আমাকে একটু সময় দাও

এমন করে চোখ রাঙিয়ো না ।।

১১/০৭/১২

সন্ধ্যা- ৭টা

By Obak Amir

আমি ভালবাসার সংজ্ঞা জানি,
জানি প্রকার ও উদাহরণ।
এখন’ই নিমেষে লিখে পেলতে পারি
একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য রচনা।
যাহাতে ভালবাসার সূচনা থাকবে,
প্রকার, উদাহরণ, সুবিধা-অসুবিধা এবং উপসংহার থাকবে।
হয়ত এই দিয়ে’ই পাশ নাম্বার তুলে ফেলতে পারতাম।।

কিন্তু আজ একি নতুন ভালবাসার সাথে
পরিচয় করালে আমায় !
আমার সংজ্ঞা, উদাহরণ সব পাল্টে দিলে তুমি।
একি স্বর্গীয় ভালবাসা !
এতো আমার রচনার ঊর্ধ্বে,
আমার কল্পনারও অতীত ।।

অদেখা তুমি হয়ে উঠলে
আমার আত্মার আত্মীয় ।
আরও একটু আবেগ জড়িয়ে বলতে চাই- “পরাণেরও পরাণ”
একটু একটু করে তুমি দখল করে নিচ্ছ
আমার মনের অলি-গলি, মানচিত্র।
আমি জানি, আমাদের এই সম্পর্কে
কোন উন্মাদনা নেয়, উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই।
আছে স্নিগ্ধতা, আকুলতা !
আর ভালবাসা, ভালবাসা ।।

নিঝুম রাত

By Obak Amir

এখন মধ্যরাত কিংবা তারও বেশি ।

ঝিমিয়ে পড়া শহর,

পথ-ঘাট গুলোও ঘুমিয়ে পড়েছে যেন !

সোডিয়াম ল্যাম্পটা শুধু জেগে আছে একা,

অন্ধকার রাতে আলোকিত পথ;

এই অবদানের গর্বে তার মুখে প্রাপ্তির হাসি ।

আজ আকাশে কোন চাঁদ নেই,

চাঁদ থাকলে ল্যাম্প পোষ্টার মন খারাপ থাকত ।

অপেক্ষাকৃত গুণবতী কিংবা রূপবতী যেমন মেয়েদের মন খারাপের কারণ ।

রাস্তার ধারের সত্ত্বাধিকারী দম্পতি এখনও জেগে ।

তাদের মাঝে টুন-টান কথা-বার্তা হচ্ছে,

সেই কথা তারা ছাড়া আর কেও শুনছে না ।

এই এত টুকুই তাদের প্রাইভেসি ।

তাদের কথোপকথনের বিষয় বস্তু হয়ত সাংসারিক,

রাজনৈতিক আলোচনা তারা করবে না;

তারা ঐ যাবতীয় চিন্তার অনেক ঊর্ধ্বে ।

ল্যাম্প পোষ্টের আলোয় দুজন দুজনাকে স্পষ্টই দেখছে,

অন্ধকারে মানুষের কথা তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়,

অলোতে ফুরায় না;

তাই তাদের কথাও শেষ হচ্ছে না ।

লোকাল একটা কুকুর গেও গেও করতে করতে এগিয়ে এলো,

শুন-শান পরিবেশেই কুকুর ডাকে বেশী

তাতে নিজেকে ভিলেন ভিলেন মনে হয়,

নীরবতার উপর খবরদারী তার বংশীয় পরম্পরা ।

এদিক ওদিক তাকিয়ে আবার লেজ নাড়তে নাড়তে চলে গেল ।

কুকুরটার মন আজ ভীষণ ভাল

মন ভাল থাকলে কুকুর লেজ নাড়ে ।

এলাকায় তার আধিপত্য দেখে সে বোধ হয় বেশ খুশী হয়েছে ।

আমিও আবার হাঁটতে শুরু করলাম

আমার মনটাও বেশ ভাল,

মানুষের মনের অবস্থা প্রকাশ করার জন্য লেজ নাড়তে হয় না

(লেজ থাকলে হয়ত তাই করতো)

চোখের মাঝেই ফুটে উঠে সকল অভিব্যক্তি,

মুখের হাসি কিংবা ভাব-ভঙ্গি অনেক সময় মিথ্যা ইঙ্গিত দেয়,

কিন্তু চোখ কখনও মিথ্যা বলে না ।

আমার চোখে মুখে এখন ভাল লাগার ছাপ

নিঝুম রাত ! তোমাকে ধন্যবাদ ।।

১লা অক্টোবর ২০১২
ভোর বেলা ।

by- Obak Amir

যদি ভালবাসার জন্য আমার কখনো শিরউচ্ছেদ ঘটে
তাহলে তুমি আমার শিরটাই নিও ।

কারন…

তাতে আমার একজোড়া চোখ পাবে
যা তোমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল,
তোমাকে যখন জিজ্ঞেস করতাম- আমাকে তুমি কেন এত ভালবাস?
তুমি বলতে- “তোমাকে ভালবাসার জন্য ঐ দুটি চোখ’ই যথেষ্ট”
সময় অসময়ে আমার চোখ পানে তাকিয়ে থাকতে আর মিটি মিটি হাসতে ।

তাতে আমার চুলগুলো পাবে,
যে চুলে হাত বুলালে তোমার মন ভাল হতো ।
যখন কোন কারনে মনটা খারাপ থাকতো, আমায় বলতে-
“মনটা খারাপ তাড়াতাড়ি এসো চুলে হাত বুলাবো”

তাতে আমার নাখটা পাবে,
যা ছিল তোমার মেজাজ দমনের উপকরন ।
যখনি আমার সাথে কথায় পেরে উঠতে না
মেজাজটা খুব খারাপ হতো
তখনি আমার উঁচু নাকে একটা টান
বেস ! এন্টিবায়োটিকের মত কাজ করতো তোমার মেজাজে ।

তাতে আমার কান দুটো পাবে,
পিসপিস করে কথা না বললে তোমার কথা পরিপূর্নতা পেতনা যেন !
আচমকা কানের কাছে মুখটি এনে বলতে-
“আইসক্রীম খাব”

তাতে আমার ঠোট দুটো পাবে,
কত শত চুম্বন রেখা যে একেছো এই ঠোটে !
প্রথমদিকে হিসেব রাখলেও শেষেরদিকে আর কূলিযে উটতে পারতাম না ।
চকলেটের শেষ অংশটুকু যখন আর বিভাজন করা যেত না,
তখন ঠোটে ঠোটে সেই চকলেটের মিমাংশা
আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অনুভূতি ।

কিন্তু…

তাতে তো আমার হাত দুটো পাবেনা,
পঞ্চ আঙ্গুলির ভেতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে পাশাপাশি হাটতে বহুদূর ।
আমার হতের তালুতে তর্জনী দিয়ে কি যেন আঁকতে,
আমি বোকা বোকা চেহারায় তাকিয়ে তোমার শিল্প কর্ম দেখতাম ।

তাতে তো আমার প্রশস্ত বুকটা পাবে না,
যে বুকে মাথারেখে কাটিয়ে দিতে সূর্যাস্তের পুরোটা ক্ষন ।
বুকের লোমগুলোর ভেতর কি যেন হাতিয়ে বেড়াতে প্রায় সময়,
খুব বেশী বলতে- “এই বুকে মাথা রেখে কাটিয়ে দিতে চাই জীবনের পুরোটা সময়”

আমি জানি তুমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছো
কোনটা নেবে তুমি?

অবাক

বিশ্ব সংসারের সৃস্ট তাবৎ সৃস্টিই আমাকে অবাক করে সারাক্ষন;

মাকড়শার জাল বোনা দেখে আমি অবাক হই
যে প্রজন্মের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে আসছে বরাবরই।

কঠিন রৌদ্রের মাঝে হঠাৎ একপশলা বৃস্টি আমাকে অবাক করে;
অবাক করে মাথার উপর ঝুলেথাকা সু-বিশাল আকাশ
(যা নেই তবুও আছের মত দেখায়)

সমুদ্রের ছুটে আসা ঢেউ আমাকে ভাবিয়ে তোলে ভাবনার ভেলায়,
অবাক করে তার নিত্য দিনের জোয়ার ভাটা

হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনের মিলিত প্রণয়ে গঠিত স্বচ্ছ পানি দেখে আমি অবাক হই,
অবাক লাগে তার সরলতা আর তরলতা দেখে।
(পাত্র যেমনি হওক আকার ধারনে অসুবিধা নেই তার)

কিউপোলা ফার্নেসে গলিত টকবগে তরল লোহা দেখে আমি অবাক হই,
অবাক লাগে তার প্রকৃত কঠিন আচরন।

আমি অবাক হই…….(চলবে)

আমি কবি নই;

আমার পূর্বপুরুষ কেউ কবি ছিলনা

সে দিন রাস্তার মোড়ে কবিরা আমার গলা কেটে দিয়ে ছিল

সঙ্গে সঙ্গে পুলকি দিয়ে বের হয়ে গেল সমস্ত কবিতার স্রোত।

সেই থেকে আমি কবি নই;

ওরা আমার আজন্ম শত্রু

ওরা চায় না আমি কবিদের খাতায় নাম লেখাই।

ওরা আমাকে দিয়ে গাদা গাদা বই পড়াতে চায়

লেদ মেশিন, শেপার মেশিন, মিলিং মেশিনের কার্যপ্রক্রিয়া আয়ত্ত করাতে চায়

কিউপোলা, ক্রুসিবল ফার্নেসের মেল্টিং ক্ষমতা বৃদ্ধি করাতে চায়

আমাকে ব্যবহার করতে চায় নবনব ইঞ্জিন আবিষ্কারের কাজে,

আমি যা হতে চাইনি কখনো।

আমি হতে চেয়েছি মুক্ত পাখি,

ডানা মেলে উড়ে বেড়াবো বিস্তীর্ন আকাশ জুড়ে।

আমি হতে চেয়েছি ভবঘুরে

রাস্তায় রাস্তায় হাটবো

হঠাৎ থমকে দাড়াবো

কিছু একটা ভাবব, এদিক ওদিক তাকাবো

আবার হাটবো।

রাস্তার ধারে পথিক হয়ে দেখবো বেস্ত মানুষের হাক।